অক্সিজেন সার্পোট না দেওয়ায় সিলেটের বিশ্বনাথে রোববার (২৩ জুন) রাতে ভূমিষ্টে হওয়ার আধা ঘন্টার মধ্যেই এক নবজাতকের প্রাণ হারিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারের অবহেলায় ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবী উঠেছে।
 

নবজাতক ভূমিষ্টের পর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে (নবজাতক) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন জরুরী বিভাগের ডাক্তার মামুুন মিয়া।


এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স বিকল থাকায়, নবজাতককে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের অক্সিজেন সাপোর্টে রাখার অনুরোধ জানিয়ে, বিকল্প অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থার চেষ্টা করছিলেন নবজাতকের পিতা। কিন্তু ডাক্তার তাদেরকে সেই সময়টুকু না দিয়ে অক্সিজেন সার্পোট ছাড়াই নবজাতকের পরিবারকে ওসমানী মেডিকেল যেতে বললে, আর তাতে পথিমধ্যেই সিএনজি চালিত অটোরিক্সাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নবজাতকটি। ওই রাতেই বিষয়টি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে, ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় তুলেন নেটিজেনেরা।
 

নবজাতকের পিতা বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের আলিম উদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের দায়ী করে বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমার সন্তান সম্ভাবা স্ত্রীকে বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। তখন তাকে একজন মিড ওয়াইফ রিসিভ করেন, এসময় সেখানে দুইজন পুরুষ ডাক্তারও ছিলেন। কিছুক্ষন পরে বাহির থেকে কিছু ঔষধ কিনে আনতে বললে এনে দেই। এক পর্যায়ে রাত ৮টার দিকে নরমাল ডেলিভারীর মাধ্যমে আমার একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করে। এর পাঁচ মিনিট পর তারা পুত্র সন্তানটিকে নীচ তলায় নিয়ে যেতে দেখি। কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন জিজ্ঞাসা করলে তারা আমাকে জানান নবজাতকের শ্বাস কষ্ট হচ্ছে, আর তাই কিছুক্ষণ জরুরী বিভাগের অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়। তখনও নড়াচড়া করছিল বাচ্চাটি আমার। পরে রেফার করা হয় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে। আমরা অ্যাম্বুলেন্স চাইলে তারা জানান সেটি বিকল। নিজ ব্যবস্থায় যেতে বলেন। তখন আমরা শিশুটিকে জরুরী বিভাগের অক্সিজেন সাপোর্টে রাখার অনুরোধ জানিয়ে বিকল্প অ্যাম্বুলেন্স আনার সময় চাই। কিন্তু ডাক্তার আমাদের সে সময়টুকু দেননি। রাখতেও দেয়া হয়নি জরুরী বিভাগের অক্সিজেন সাপোর্টেও। তখন উপায় না দেখে অক্সিজেন সার্পোট ছাড়াই সিএনজি চালিত অটোরিক্সাযোগে আমরা ওসমানী হাসপাতালের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। কিন্তু বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে পৌঁছার পূর্বে আমার বাচ্চাটি মারা যায়। এদায় সম্পূর্ণ ডাক্তারের। তারা আমাকে একটু সহযোগিতা করলে হয়তো অক্সিজেন সাপোর্টসহ বাচ্চাটিকে নিয়ে বের হতে পারতাম।
 

অভিযুক্ত ডা. মামুন মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,‘অবস্থাদৃষ্টে নবজাতকের তখন এনআইসিইউতে চিকিৎসা জরুরী ছিলো। যেটি আমাদের ওখানে নেই। তাই রেফার করা হয়। তখন তারা কেউ আমাদের কোন কিছু বলেননি।
 

এবিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন বলেন, উনারা বাড়িতে চেষ্ঠা করে অন্তিম সময়ে হাসপাতালে প্রসূতিকে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারী করানো হয়। কিন্তু বাচ্চার অবস্থা অবনতি হলে তাকে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আমাদের অ্যাম্বুলেন্স বিকল আর সরকারি অক্সিজেন সার্পোট অন্য গাড়ীতে বাহিরে দেয়ারও বিধান নেই।


 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রনঞ্জয়/এসডি-৫৫০১