সিলেটের বিয়ানীবাজারে ৪ 'শ বস্তা চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক তাহমিদকে গ্রেফতার করেছের থানাপুলিশ।

 



রবিবার (১৬ জুন) বিয়ানীবাজার পৌরসভার নিদনপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে থাকে গ্রেপ্তার করে।

 


জাহিদুল হক তাহমিদ বিয়ানীবাজার পৌরসভার নিদনপুর গ্রামের নুরুল হকের ছেলে।

 


বিয়ানীবাজার থানার মিডিয়া অফিসার এসআই(নিরস্ত্র) শিমুল রায় সিলেটভিউ-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

 


তিনি বলেন, গত ৮ জুন উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের লালপুর এলাকায় ৪০০'শ বস্তা ভারতীয় চিনি সরকারি নিলামে কেনা এক ব্যবসায়ীর ট্রাক ভর্তি মালসহ চালক ও তার সহযোগীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুট করে নিয়ে যায় উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা। উক্ত ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জাহিদুল হক তাহমিদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।

 

গত ১৬ জুন বিয়ানীবাজার উপজেলায় অস্ত্রের মুখে চিনি লুটের ঘটনায় বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠে।  বৃহস্পতিবার নেট দুনিয়ায় ছিনতাইয়ের চিনির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শফিউল্লাহ সাগর ও সেক্রেটারি জাহিদুল হক তাহমিদের একটি ফোনকলের ভয়েস রেকর্ড ছড়িয়ে পড়লে স্পষ্টত শুনা যায় তাদের সহযোগীদের সংশ্লিষ্টতা ও ভাগের হিসেব।

 

ফোন কলে বেরিয়ে আসে তাদের সাথে জড়িত নেতাদের কে কত বস্তা পেলেন। এছাড়াও তাহমিদ ও সাগর এখানে কয়েক বস্তা চিনির ভাগ পেয়েছেন।

 


এ বিষয়টি জানাজানি হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

 

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবদুলাল ধর গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামী জাহিদুল হক তাহমিদকে তদন্তের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে তিনি জানান।

 


তিনি আরও বলেন, ট্রাকভর্তি চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার ও অবশিষ্ট ৩২০ বস্তা চিনি উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

 

এর আগে ৮০ বস্তা চিনি ও একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার এবং গত মঙ্গলবার এজাহারভুক্ত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তারা হচ্ছে- কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হোসাইনপুর গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে মো. লিটন মিয়া (২৬)। তিনি বর্তমানে বিয়ানীবাজার পৌরসভার দাসগ্রামের লিচুটিলাস্থ ছাত্তার মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছে। অন্য আরেক আসামী হাসান (২১)। তিনি বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর বোবারগুল এলাকার মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে।

 


ঘটনার পর চিনির বৈধ মালিক দাবি করা ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম থানাপুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার এজাহারে ঘটনার সাথে জড়িত ১১ জনের নামোল্লেখ্যসহ অজ্ঞাত আরো ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়।

 


মামলার আসামিরা হলেন- ছোটদেশ ছুটিয়াংয়ের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে তারেক আহমদ (২৩, ছাত্রলীগ কর্মী), খাসাড়িপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল আহমদ (২৪, ছাত্রলীগ কর্মী), শ্রীধরার মুজিবুর রহমানের ছেলে বক্কর (২৫, স্যানেটারী মিস্ত্রী), একই গ্রামের আনছার আলীর ছেলে আনু (২৩, দিনমজুর) ও আজির উদ্দিনের ছেলে ছাদিক আহমদ (৩০, সবজি ব্যবসায়ী), কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার হোসাইনপুর গ্রামের (বর্তমানে পৌরশহরের দাসগ্রাম লিচুটিলা ছাত্তার মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া) মো: খলিল মিয়ার ছেলে মো: লিটন মিয়া (বহিরাগত ছাত্রলীগ ক্যাডার), মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা শাহবাজপুর এলাকার বোবারতল গ্রামের (বর্তমানে সুপাতলা) মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে হাসান (২১, বহিরাগত ছাত্রলীগ ক্যাডার), নবাং গ্রামের শরফ উদ্দিনের ছেলে জিবান (২২, বখাটে ছাত্রলীগ কর্মী), চট্রগামের বাসিন্দা বর্তমানে সুপাতলার নছরুল্লাহর ছেলে শফিউল্লাহ সাগর (২৮, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি), খাসাড়িপাড়া গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে ফাহাদ আহমদ (২৩, ছাত্রলীগ কর্মী) ও চারখাই জালালনগরের হেলাল মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ (২৪, মহানগর ছাত্রলীগ কর্মী) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭-৮জন।

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / হাফিজুর / ডি.আর